ঋণের বোঝায় দেশকে পরনির্ভরশীল করে ফেলেছে সরকার: ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ক্ষমতায় থাকার স্বার্থে আওয়ামীলীগ দেশকে বিক্রি করে দিচ্ছে, পরনির্ভরশীল করে ফেলেছে। তিনি বলেন, বিএনপি দেশটাকে ভালোবাসত বলে তারা চট করে জনগণের ওপরে করের বোঝা, ঋণের বোঝা চাপায়নি। আজকে প্রতিটি ব্যক্তির ওপরে এক লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা ঋণ, চিন্তা করতে পারেন! এরপরও তারা বাজেট দেয় যেখানে কোনো দিকনির্দেশনা নেই। আজকে এই সরকার দেশটাকে কোথায় নিয়ে গেছে?

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।  রোববার (০৯ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) উদ্যোগে এই আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। ইউট্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় ‘বাংলাদেশে বিজ্ঞান গবেষণা ও শিক্ষিত জাতি গঠনে শহীদ জিয়া’ এবং ‘জিয়াউর রহমান: ক্রান্তিকালের ত্রাণকর্তা ও আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি’ শীর্ষক দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। প্রবন্ধের লেখক অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি, অধ্যাপক কামরুল আহসান ও অধ্যাপক তৌফিকুল ইসলাম।

ইউট্যাবের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মো. রইছ উদ্দীনের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য ফজলুল হক মিলন, পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, এশিয়াটিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান খান, ইউট্যাবের লুৎফুর রহমান, আবদুর রশীদ, শামসুল আলম সেলিম, আখতার হোসেন, হাবিবুর রহমান, আলীমুর রহমান, আমজাদ হোসেন প্রমুখ।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, যেসব বুদ্ধিজীবী তাদের(আওয়ামীলীগ সরকার) প্রশংসা করেন তারা কী নিজেদের বিবেককে প্রশ্ন করেন? সুতরাং আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বলবো আপনারা জাতি গঠনে কাজ করুন। দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরি করুন। আজকে ডাকসু নির্বাচন নেই। কোনো নির্বাচন নেই।

তিনি বলেন, নিজের সততা দিয়ে দেশের আমূল পরিবর্তন এনেছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছিলেন। আজকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছেন জিয়াউর রহমান। জাতীয় প্রেসক্লাব তো জিয়াউর রহমানের অবদান। অথচ তার নামই উচ্চারণ করতে চায় না। 

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশটাকে জাহান্নামে নিয়ে গেছে সরকার। দেশের সকল কাঠামো ধ্বংস করেছে। মানুষের মধ্যে যে একটা সৌহার্দ্য ছিল, ভ্রাতৃত্ব ছিল, সেগুলো তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। আজকে আওয়ামী লীগ না করলে কারও চাকরি হয় না। দেশের সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে আওয়ামী লীগ। তাদের মিথ্যা বলায় জুড়ি মেলা ভার। আওয়ামী লীগ কোন মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে। এরকম একটি দল দেশ ও জাতির জন্য বড় সমস্যা। তারা দেশকে বিক্রি করে দিচ্ছে। দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করে দিচ্ছে। আসুন সবাই মিলে দেশটাকে বাঁচাই।
 
তিনি বলেন, কারা আসছে আজকে আমাদের নেতৃত্বে? দেখেন আপনি তাদের কোয়ালিটি দেখেন কী অবস্থা। আমাদের সব জায়গায় নেতৃত্বের সংকট। কেন? যেন নেতৃত্ব সৃষ্টি না হয় পরিকল্পিতভাবে সেই ব্যবস্থা তারা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘দলীয়করণ করে’ শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।

ফখরুল বলেন, আওয়ামী দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বাইরে যেতে পারেনা। আওয়ামী লীগের রসায়নই হচ্ছে দুর্নীতি-সন্ত্রাস। আওয়ামী লীগের চরিত্র হচ্ছে কাউকে সহ্য করতে না পারা। তারা প্রথমত সহিষ্ণুতায় বিশ্বাস করেনা। পক্ষান্তরে জিয়াউর রহমান সবার কথা শুনতেন। তিনি কথা কমই বলতেন। তিনি বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞ ও দক্ষ ব্যাক্তি সবার সঙ্গে কথা বলে যে শিক্ষা কমিশন গঠন করেছিলেন তা বাংলাদেশে আর কখনো হয়নি। পরবর্তী প্রজন্ম তো তাকে স্মরণ করতে পারবেনা। এমনকি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ পাঠ্যপুস্তকে তার সম্পর্কে কোনো কিছু লেখা নেই। এটা করা হচ্ছে পরিকল্পিতভাবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, এখন তো দেখছেন চুরি, দুর্নীতি কীভাবে হচ্ছে। ওই সময়ে তাদের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘অন্য নেতারা দেশে পায় সোনার খনি, আর আমি পাই চোরের খনি’।
আ. দৈনিক/ এক