রেলওয়েকে লোকসানের প্রতিষ্ঠান উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারের রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, রেলওয়েতে এক টাকা আয় করার জন্য আড়াই টাকার মতো খরচ হয়। দুর্নীতি যাতে কমে এবং অপচয় যাতে বন্ধ হয় সেজন্য আমরা কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছি।
আজ বুধবার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ভিআইপি লাউঞ্জের সামনে ঢাকা-ভৈরববাজার-ঢাকা রুটের নতুন এক জোড়া কমিউটার ট্রেন উদ্বোধনকালে রেলপথ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
ফাওজুল কবির বলেন, ‘দুর্নীতির বিষয়ের সচিব ও রেলের মহাপরিচালককে টার্গেট দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে বলা হয়েছে, এক টাকা আয় করতে আমাদের আসলে কত টাকা ব্যয় হয়, সেটা বের করতে।’
তিনি বলেন, ‘এছাড়া বিনা টিকিটে অনেক যাত্রী রেলে সেবা নিয়ে থাকে। রেল সেবার মূল্য তুলনামূলকভাবে অনেক কম। এরপরেও কিছু কিছু এলাকার যাত্রীরা আছেন, যারা ভাড়া দেন না। এভাবে চলতে থাকলে রেলওয়ে সার্ভিস বন্ধ হয়ে যাবে। আপনার যদি দেখেন কেউ ভাড়া দিচ্ছে না, তাহলে তাকে আমাদের নজরে আনবেন। যদি রেলের লোকসান আরও হয় তাহলে এটাকে মোকাবিলা করার জন্য আমাদের রেলের সেবা কমানো ছাড়া কোনো বিকল্প থাকবে না।’
এ সময় নরসিংদীর বাসিন্দারা আন্তনগর ট্রেনের স্টপেজ চাইলে রেলপথ উপদেষ্টা বলেন, ‘সবাই নিজের বাড়ির কাছে স্টপেজ চায়। প্রত্যেকটা স্টপেজে দাঁড়াতে-ছাড়তে ৫ থেকে ১০ মিনিট সময় লাগে। এখন যদি একটা আন্তনগর ট্রেনে দশটা স্টপেজ বাড়ানো হয়, তাহলে এক ঘণ্টা সময় বেশি লাগবে। এক্ষেত্রে ট্রেনের যাত্রীরা বিরক্ত হবেন। এই জন্য আমরা একটা মিশ্রণ করব। আন্তনগর ট্রেনের স্টপেজের সংখ্যা কম থাকবে। লোকাল কম্পিউটার ট্রেনে স্টপেজের সংখ্যা বেশি থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘রেলওয়ে কোচ ও ইঞ্জিন সংকট রয়েছে। যেগুলো এখন আছে সেগুলো দিয়ে আমরা চালানোর চেষ্টা করছি। আমরা কোচ ও লোকোমোটিভ সংগ্রহ করার চেষ্টা করছি। আজকেই ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকারের একটি দল গণচীনে যাবে। সেখানে আমরা আমাদের কোচ ও লোকোমোটিভ সংকট নিয়ে আলোচনা করব।’
মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ঢাকা ও বড় শহরের বাইরের শহরগুলোর দিকে নজর দিয়েছে। শহরের বাইরের মানুষের যে প্রয়োজন সেগুলো বোঝার চেষ্টা করছি ও মেটানোর চেষ্টা করছি।’
এর আগে, সকাল ৯টা ৫ মিনিটে নতুন ট্রেনটি ভৈরববাজার থেকে এসে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের তিন নম্বর প্লাটফর্মে থামে। এ সময় ট্রেনের যাত্রীদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন রেলপথ উপদেষ্টা। এ আয়োজনে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আ.দৈ/আরএস