আজকের দৈনিক | সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: জুন ১০, ২০২৪, ০৪:৫৩ পিএম
বাংলাদেশে এমন দৃষ্টিনন্দন বিদ্যাপীঠ কমই আছে। যেখানে রয়েছে প্রকৃতির কাছ থেকে বিদ্যা লাভ করার সুযোগ। যেখানে ব্যতিক্রম পরিবেশে শিক্ষাদান করা হয়। ব্যতিক্রম সেই বিদ্যাপিঠের নাম ' মনোহরপুর সরকারি প্রাথমিকভাবে বিদ্যালয়'। সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার পাঙ্গাসী ইউনিয়নের অজোপাড়া গায়ে মনোহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টির অভ্যন্তরিন মনোমুগ্ধকর নান্দনিক পরিবেশ প্রশংসার দাবিদার। এই বিদ্যালয়টি ১৯৮৭ সালে পাঙ্গাসী লায়লা মিজান স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক এসএম মুনসুর রহমান প্রতিষ্ঠাতা করেন। ২০১৩ সাল পযর্ন্ত স্কুলটি রেজিষ্টার ভুক্ত ছিল। ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি সরকারিকরন হয়।
অসাধারণ, সাদামাটা একটি গ্রাম মনোহরপুর। যেখানে সকাল থেকেই জীবনযুদ্ধ শুরু হয় খেটে খাওয়া মানুষের। মা-মাটির গন্ধ যেখানে মিশে আছে। প্রত্যন্ত গ্রামে বিদ্যালয়টি গড়ে উঠলেও আধুনিক পরিবেশে শিক্ষা লাভ করছে শিক্ষার্থীরা। ভোরে আলো ফোটার পর যেখানে পাখির কিচির-মিচির শব্দে ঘুম ভাঙে। শিক্ষার জন্য প্রয়োজন একটি সুন্দর এবং মনোরম পরিবেশ। এখানে শিশুরা মনের আনন্দে খেলা করে। সবুজ দুর্বা ঘাস আর সবুজ পাতার ফাঁকে তারা যেন শৈশবকে হাসি, ঠাট্টা আর আনন্দ উপভোগ করে কাটিয়ে দিচ্ছে। এখানে ছাত্র-ছাত্রীদের আধুনিক সৃজনশীল পদ্ধতিতে পাঠদান করা হয়। অসাধারণ স্থাপনায় নির্মিত এই বিদ্যালয় ভবনের চারপাশ খোলামেলা। শ্রেণিকক্ষসহ বিদ্যালয়ের সবকিছুই রঙিন প্রচ্ছদে ঢাকা। ছেলে-মেয়েদের জন্য আছে একাধিক আলাদা আলাদা ওয়াশরুম। খেলাধুলার জন্য রয়েছে নানা সরঞ্জাম।
(সরেজমিনে ১০ জুন ২০২৪) পরিলক্ষীত হয়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, পরিচালনা কমিটির সার্বিক প্রচেষ্টা ও আন্তরিকতা, বিদ্যালেয়ের পরিষ্কার পরিচ্ছনতা, শিশুবান্ধব শিক্ষকতা, শিক্ষক -অভিভাবকের সমন্বয়, সুশৃঙ্খল নিয়মানুবর্তিতা , সুদূর প্রসারি পরিবেশবান্ধব পরিকল্পনা উদ্যোগ , নিজস্ব ও বার্ষিক থোক /স্লিপ বরাদ্দের উদ্ধৃত ও সঞ্চিত অর্থায়নে মনোহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও তার আশপাশে সৃজিত হয়েছে এক দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ । বিদ্যালয় ও মাঠের চারপাশের সাড়িবদ্ধ মেহগনি, বিভিন্ন জাতের গাছ দৃশ্য নজর কাড়ার মত।
বর্তমানে শিশু শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ২৭৪জন শিক্ষার্থী রয়েছে। সহকারি শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ, আব্দুর রহিম, তারিকুল ইসলাম, তাসলিমা আফরোজ ও রিনা পারভীন সহ ৬ জন শিক্ষক রয়েছে। তাদের সর্বাত্মক চেষ্টায় আজ অজো পাড়া গায়ে বিদ্যালয়ে আজ সৌন্দর্য্যমন্ডিত ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শিক্ষকরা জানান, বিদ্যালয়টিতে এমন শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার পেছনে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ময়মুন ও প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক আকন্দ এর সবচেয়ে বেশি অবদান রয়েছে।
শিক্ষকরা জানান, বিদ্যালয়টি এমনভাবে সাজানো হয়েছে, যা প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে আকর্ষণ করে। ফলে ছুটি হলেও অনেকে বাড়িতে যেতে চায় না।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পরিবেশের ভারসম্য রক্ষা ও বিদ্যালয়ের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধিতে গাছের কোন বিকল্প নাই। সে লক্ষে আমি ও অত্র বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন স্কুল পরিচালনা পরিষদের সাথে পরামর্শক্রমে বার্ষিক থোক/স্লিপ বরাদ্দের উদ্ধৃত সঞ্চিত টাকা থেকে বিদ্যালয়ের বিল্ডিংয়ে বিভিন্ন লেখা সম্বলিত লেখা লিখে রং করি। তিনি আরোও বলেন, শিক্ষা অফিসার আপেল মাহমুদ মহোদয়ের নির্দেশে অজো পাড়া গায়ে বিদ্যালয়ে আজ সৌন্দর্য্যমন্ডিত ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পেরেছি।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন বলেন, বিদ্যালয়ের উন্নয়ন করাই আমার ধ্যান-জ্ঞান। শিশুদের হইচই ও খেলাধুলা দেখতে আমার ভালো লাগে। তাদের জন্য আরও কিছু করতে চাই।
আ.দৈনিক / একে / আশরাফ
আপনার মতামত লিখুন :