বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান তার ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট ম্যাচ নিজ দেশের মাটিতে খেলতে চেয়েছিলেন। এজন্য দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশে নিজের নিরাপত্তা চেয়েছিলেন তিনি। তার নিরাপত্তার বিষয়ে আজ মুখ খুলেছেন ক্রিড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এবং শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা।
আজ রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে শ্রম মন্ত্রণালয়ে গ্রামীণফোণের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং চেকগ্রহণ অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে ক্রিড়া উপদেষ্টা বলেন, খেলোয়াড় হিসেবে যতটুকু প্রয়োজন, সাকিব আল হাসানকে ততটুকু নিরাপত্তা দেওয়া হবে। রাষ্ট্রের জায়গা থেকে রাষ্ট্র প্রত্যেক নাগরিককে নিরাপত্তা দিতে বাধ্য এবং সেটা আমরা অবশ্যই করবো।
তিনি বলেন, এখানে সাকিব আল হাসানের পরিচয় দুইটা। এটা আমাদের মনে রাখতে হবে। খেলোয়াড় হিসেবে একটা পরিচয়, আরেকটা হচ্ছে রাজনৈতিক পরিচয়। উনি আওয়ামী লীগের প্যানেল থেকে এমপি ইলেকশন করেছেন। মানুষের মধ্যে তো দুটো নিয়েই মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে।
এখন খেলোয়াড় হিসেবে, একজন খেলোয়াড়কে যতটুকু নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সেটা অবশ্যই আমরা দেবো। দেশে এলে আমরা সেটা দেবো। তার নামে যে হত্যা মামলাটা হয়েছে, এটার বিষয়ে আমরা বলেছি, আইন মন্ত্রণালয়ও বলেছে, সংশ্লিষ্টতা না থাকলে প্রাথমিকভাবেই বাদ দেওয়া যায়, বলেন আসিফ মাহমুদ।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু উনার রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে জনগণের মধ্যে যদি ক্ষোভ থাকে, তাহলেৃ। মনে করেন আমার নিরাপত্তার জন্য পাঁচজন পুলিশ কনস্টেবল এবং একজন গানম্যান থাকে। আমার উপরে যদি দেশের ১৬ কোটি জনগণের, ১০ কোটি জনগণের যদি ক্ষোভ থাকে তাহলে এই ৫-৬ জন আমাকে কী নিরাপত্তা দেবে? সেক্ষেত্রে জনগণের যদি কোথাও ক্ষোভ থাকে তাহলে সেটাও আমাকে রিডিউস (কমাতে) করতে হবে আমার কথা দিয়ে।
উপদেষ্টা বলেন, আমার মনে হয় উনাকে (সাকিব আল হাসান) উনার জায়গাটা পরিষ্কার করা প্রয়োজন, রাজনৈতিক জায়গা থেকে। উনার যে রাজনৈতিক অবস্থান সেটা নিয়ে কথা বলা প্রয়োজন। অলরেডি মাশরাফি বিন মর্তুজা কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, জনগণের পক্ষ থেকে যদি নিরাপত্তার ঝুঁকি থাকে, সেটা কেউ কাউকে আসলে দিতে পারবে না। শেখ হাসিনাকেও নিরাপত্তা দেওয়া যায়নি, তাকে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে। সে জায়গায় রাজনৈতিক বিষয়টা, পরিচয়টা পরিষ্কার করা প্রয়োজন বলে মনে করি। কিন্তু প্রত্যেক খেলোয়াড়কে নিরাপত্তা দেওয়াই আমাদের দায়িত্ব এবং সেই দায়িত্ব আমরা পালন করি।
এছাড়াও এর আগে সাকিবের নিরাপত্তা ইস্যুতে বিসিবির নবনির্বাচিত সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেন, সাকিবের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বিসিবির পক্ষে সম্ভব নয়, এটি বিসিবির কাজও নয়। নিরাপত্তার বিষয়টি পুরোপুরি সরকারের হাতে।
এদিক আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিসিবি পরিচালক ও সাকিবের দীর্ঘদিনের কোচ নাজমূল আবেদীনও ঘরের মাঠে সাকিবের শেষ টেস্ট খেলার সম্ভাবনা কম বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমিও চাইব ওর মতো একজন খেলোয়াড় দেশে খেলা শেষ করবে, সংস্কৃতির ব্যাপারও আছে এখানে।
তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে অনিবার্য কারণবশত এ মুহূর্তে সেই সম্ভাবনা দেখছি না। কারণ, ক্রিকেট বোর্ড বলেছে, যে ধরনের নিরাপত্তা সাকিব চাইছে, ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষে সেটা সম্ভব নয়।’
ক্রিড়া উপদেষ্টা, বিসিবি সভাপতি এবং পরিচালকদের মন্তব্য থেকে একথা অনেকটাই ধারণা করা যায় যে খুব সম্ভবত কানপুরের কানপুর টেস্টই হতে যাচ্ছে সাকিবের ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট ম্যাচ।
আ. দৈ. /কাশেম/ সাধ