শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪,
২০ আশ্বিন ১৪৩১
ই-পেপার

শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
সাইবার বুলিং: আধুনিক যুগের এক নীরব আতঙ্ক
কামরান চৌধুরী
Publish: Saturday, 28 September, 2024, 8:50 PM

সাইবার অপরাধ, বিশেষত সাইবার বুলিং, আধুনিক যুগে এক নতুন মনস্তাত্ত্বিক অত্যাচারে পরিণত হয়েছে। ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার কারণে মানুষ প্রতিনিয়ত ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সংযুক্ত হচ্ছে, এবং এর ফলে সাইবার অপরাধের শিকার হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ছে। সাইবার বুলিং হলো অনলাইনে অপমান, হুমকি বা অবমাননাকর আচরণ করা, যার ফলে ব্যক্তির মানসিক, সামাজিক এবং কখনো কখনো শারীরিক ক্ষতি হতে পারে।


বুলিং কী?
বুলিং বলতে এক ধরনের মানসিক বা মৌখিক অত্যাচার বোঝায়, যেখানে একজন মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবে অন্যকে অপমান করে, হুমকি দেয় বা হেনস্তা করে। সাইবার বুলিংয়ের ক্ষেত্রে, এই অত্যাচার ইন্টারনেটের মাধ্যমে করা হয়। সোশ্যাল মিডিয়া, মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম বা অনলাইন ফোরাম ব্যবহার করে। এটি ব্যক্তির মানসিক শান্তি নষ্ট করে এবং অনেক সময় সামাজিকভাবে তাকে একঘরে করে তোলে।


কেইস স্টাডি: সাইবার বুলিং এর ভুক্তভোগী
সম্প্রতি মিসেস জেসমিন আরা নামের একজন ব্যবসায়ী তার বুটিক শপের পণ্য ফেসবুক লাইভে প্রচার করতে গিয়ে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হন। তার লাইভ সেশনে কিছু বিকৃত মানসিকতার লোক খারাপ এবং অশ্লীল মন্তব্য করে। এতে তিনি প্রায়ই মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন এবং হেনস্তার শিকার হন। এমন ঘটনা আমাদের চারপাশে অহরহ ঘটে চলেছে, যা সামাজিক এবং ব্যক্তিগত জীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলছে।


সাইবার বুলিংয়ের প্রভাব
সাইবার বুলিং শুধু মানসিক চাপ সৃষ্টি করে না, এটি আত্মবিশ্বাসের উপর আঘাত হানে এবং ভুক্তভোগীকে মানসিকভাবে দুর্বল করে তোলে। বিশেষ করে কিশোর-কিশোরী, নারী এবং বিনোদন জগতের তারকারা সাইবার বুলিংয়ের শিকার হলে তাদের ব্যক্তিগত জীবন মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়। অনেক ক্ষেত্রে সাইবার বুলিং দীর্ঘমেয়াদী মানসিক আঘাত সৃষ্টি করে, যা আত্মহত্যা পর্যন্তও নিয়ে যেতে পারে।


সাইবার বুলিং প্রতিরোধে করণীয়
১. প্রমাণ সংরক্ষণ
বুলিংয়ের শিকার হলে প্রথমেই সেই ঘটনার প্রমাণগুলো সংরক্ষণ করতে হবে। স্ক্রিনশট, মেসেজ বা যে কোনো ধরনের তথ্য জমা রাখুন, যা পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপে সহায়ক হতে পারে।

২. পাল্টা আক্রমণ না করা
বুলিংয়ের শিকার হলে কখনোই পাল্টা আক্রমণে যাবেন না। এতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। বরং যতটা সম্ভব তা এড়িয়ে চলুন এবং নিজেদের মানসিক শক্তি ধরে রাখুন।

৩. পরিবার বা বন্ধুর সাথে শেয়ার করা
অনেক ভুক্তভোগী নারী বা কিশোর-কিশোরী এই বিষয়টি পরিবার বা বন্ধুর সঙ্গে শেয়ার করতে দ্বিধাবোধ করে। কিন্তু এটি করা অত্যন্ত জরুরি, কারণ আপনাকে মানসিক সহায়তা দিতে পারবে আপনার কাছের মানুষরাই।

৪. সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্লক করা
যদি কেউ আপনাকে হেনস্তা করে, সঙ্গে সঙ্গে সেই ব্যক্তির সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দিন। অযথা তর্কে জড়ানো কোনোভাবেই সমাধান নয়।

৫. আইনি সহায়তা গ্রহণ
যদি বুলিংয়ের প্রভাব শারীরিক হুমকি বা জীবননাশের পর্যায়ে পৌঁছায়, তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশের সাহায্য নিন। বাংলাদেশে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে জরুরি পুলিশ সেবা পাওয়া যায়।

সাইবার বুলিং একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা, যা মোকাবিলা করতে হলে সচেতনতা ও সঠিক আইনি পদক্ষেপ প্রয়োজন। তাই সাইবার বুলিংয়ে ভীত নয়, সাহসী হয়ে মোকাবেলা করা উচিত।


আ.দৈ/এআর 
আপনার মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

ঘর-বাড়ি শয়তানের প্রভাবমুক্ত হয় যেভাবে
চাটখিল থানা অগ্নিকাণ্ড ও লুটপাটের অভিযোগে হাসান তফদার কারাগারে
দেশে শেখ হাসিনা না থাকলে তাদের প্রেতাত্মারা আছে :-জয়নুল আবদিন ফারুক
শাজাহানপুরে মির্জা আব্বাসের বাসায় হামলা, সাবেক দুই আইজিপিসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
দেশের কোনো পিতা হয় না: কঙ্গনা রানাওয়াত
আরো খবর ⇒

জনপ্রিয় সংবাদ

ডিএনসিসি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহবায়ক- প্রকৌশলী আরিফুর রহমান, সদস্য সচিব-শাহেদ জোহার
বাউফলে সুদের টাকার চাপে রিক্সা শ্রমিকের কীটনাশক পান
গণতন্ত্র বিনষ্টের মূলে রাজনীতিবিদরাই দায়ী, বাউফলে বিতর্ক প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত
সাদিক -ফরহাদের নেতৃত্বে ঢাবি শাখা শিবিরের পুর্ণাঙ্গ কমিটি
বাউফলে কবরস্থানে যুবলীগ সভাপতির মাদকের আখড়া
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি- এর আরো খবর
সম্পাদক ও প্রকাশক : কামরুজ্জামান সাঈদী সোহাগ
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মাসুদ আলম
নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ তৌহিদুর রহমান

প্রকাশক কর্তৃক ১১/১/বি উত্তর কমলাপুর, মতিঝিল থেকে প্রকাশিত
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : সাগুফতা ডি লরেল (তৃতীয় তলা), কমলাপুর বাজার রোড, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০

মফস্বল সম্পাদক : ০১৭৭৫৮১৮২৭৫, ফোন : ০১৭১২-৫০১২৩৬, ০২-৫৮৩১৬১০৯ , ই-মেইল : [email protected]
© ২০২৪ আজকের দৈনিক
🔝