আজকের দৈনিক | মাদারীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: এপ্রিল ২০, ২০২৪, ০৮:০৯ পিএম
মাদারীপুরে দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘর থেকে স্বামীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের দাবি, মুক্তিপনের ৫০ লাখ টাকা না পেয়ে হত্যা করা হয়েছে সুব্রত পালকে। নিহত সুব্রত পটুয়াখালীর বাউফল পৌরসভার চন্দ্রপাড়া এলাকার কৃষ্ণ কান্ত পালের ছেলে।
এই ঘটনায় অভিযুক্ত দ্বিতীয় স্ত্রী মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার চৌরাশি গ্রামের জগবন্ধু বাড়ৈর মেয়ে মিতালী বাড়ৈ ও তার মা মিনা বাড়ৈকে আটক করা হয়েছে। মাদারীপুর পৌরসভার কুকরাইল এলাকার কাতার প্রবাসী রাশেদ মাতুব্বরের তিনতলা ভবনের নিচতলায় ঘটে এ ঘটনা। সেখানে তিনমাস আগে ভাড়া ওঠেন রাজৈরের বাতিজপুর ইউনিয়নের চৌরাশি গ্রামের মৃত জগবন্ধু বাড়ৈর মেয়ে মিতালী বাড়ৈ।
স্বজনরা জানায়, বেশ কিছুদিন আগে মোবাইল ফোনে পটুয়াখালীর বাউফল পৌরসভার চন্দ্রপাড়া এলাকার কৃষ্ণ কান্ত পালের ছেলে সুব্রত পালের সাথে পরিচয় হয় মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার চৌরাশি গ্রামের জগবন্ধু বাড়ৈর মেয়ে মিতালী বাড়ৈ। পরে প্রতারণার মাধ্যমে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে ৫০ লাখ টাকা কাবিন ধায্য করে বিয়ে হয় মিতালী ও সুব্রত’র। গত বৃহস্পতিবার সুব্রতকে মোবাইলে কল দিয়ে মাদারীপুরে ডেকে আনেন মিতালী।
পরে দুদিন শহরের কুকরাইল এলাকার একটি বাসায় সুব্রতকে আটকে রেখে করা হয় মানসিক নির্যাতন। আগের বিয়ে গোপন রেখে সুব্রত দ্বিতীয় বিয়ে করায় পরিবারের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে মুঠোফোনে চাওয়া হয় কাবিনের ৫০ লাখ টাকা। মুক্তিপনের টাকা দিতে না পারায় আর কোন যোগাযোগ করতে পারেনি পরিবার। এরপর শুক্রবার মধ্যরাতে পুলিশের জরুরি সেবা ত্রিপল নাইনে কল পেয়ে একটি রুমের দরজা ভেঙ্গে সুব্রত’র ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
পরে ময়না তদন্তের জন্য শনিবার সকালে মরদেহ পাঠানো হয় জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে। স্বজনদের অভিযোগ, মুক্তিপণের টাকা না দেয়ায় মেরে ফেলা হয়েছে সুব্রতকে। এই ঘটনায় দোষিদের বিচারের দাবী করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
নিহত সুব্রত’র প্রথম স্ত্রী চম্পা বাড়ৈ বলেন, শুক্রবার রাতে কয়েক বার স্বামীর সাথে মোবাইলে কথা হয়। বার বার বলছিলেন ৫০ লাখ টাকা ম্যানেজ করে নিয়ে আসতে। টাকা না দিলে তাকে মেরে ফেলবে। যতবার কথা হয়েছে, ততবার’ই ৩০ থেকে ৪০ সেকেন্ড কথা হয়। এরপর মোবাইল কেড়ে নেয় মিতালী ও তার সাথে থাকা লোকজন। আমার স্বামীকে পরিকল্পনা করে মেরে ফেলা হয়েছে, এই ঘটনার বিচার চাই।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম সালাউদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে দরজা ভেঙ্গে নিহতের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুইজনকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে নেয়া হবে আইনগত ব্যবস্থা।
আ. দৈনিক / একে/ ইমদাদুল
আপনার মতামত লিখুন :